Scrolling Text

ট্রাভেল ক্লাবে আপনাকে স্বাগত। আপনার বেড়ানোর অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিন সবার সাথে। লেখা ও ছবি পাঠাতে ক্লিক্‌ করুন Contact Us ট্যাবে।

Friday 6 July 2012

Mussorie, the queen of hills.


পাহাড়ের রাণী মুসৌরী

Travel Mussorie, Location of Mussorie, Distance of Mussorie from different places, how to go to Mussorie , where to stay in Mussorie, places to visit near Mussorie,  shopping in Mussorie, weather of Mussorie.

ভারতবর্ষের পাঁচটা জনপ্রিয় হিল স্টেশনের নাম বলতে হলে একটা নাম অবশ্যই হবে মুসৌরী (Mussorie, मसूरी)। গাড়োয়াল হিমালয়ে প্রায় ৬৫০০ ফিট উচ্চতার এক সুন্দর পাহাড়ি শহর মুসৌরী। সাধারণ  মানুষের কাছে মুসৌরী পরিচিত পাহাড়ের রাণী নামে।  বাঙালীরা মুসৌরী উচ্চারণ করলেও স্থানীয় উচ্চারণে জায়গাটার নাম ‘মসুরী’।


যাবেন কিভাবে-
মুসৌরীর জনপ্রিয়তার অন্যতম প্রধান কারন হল ভারতের রাজধানী দিল্লী থেকে এর নৈকট্য, মাত্র ২৯০ কিলোমিটার। সরাসরি বাস যোগাযোগ আছে দিল্লী এবং মুসৌরীর  মধ্যে। দিল্লীর প্রচন্ড গরম থেকে বাঁচতে অনেকেই উইক-এন্ড-ট্যুরে ছুটে যান মুসৌরী। উত্তরাখন্ডের রাজধানী দেরাদুন থেকে মুসৌরীর দূরত্ব ৩৫ কিলোমিটার। দেরাদুন থেকে বাসে বা ট্যাক্সিতে ঘন্টা দেড়েকে পৌঁছে যাওয়া যায় মুসৌরী। হরিদ্বার (দূরত্ব ৮৬ কি.মি.) বা হৃষীকেশ (দূরত্ব ৭৭ কি.মি.) থেকেও অনেকে দিনে দিনে বেড়িয়ে আসেন মুসৌরি, তবে হিলস্টেশনে রাত্রিযাপন না করলে আসল আনন্দটা পাওয়া যায় না। তাছাড়া রাত্রে মুসৌরীর ম্যাল থেকে দুন ভ্যালির দৃশ্য অসাধারন। পশ্চিমবঙ্গ থেকে যেতে হলে ট্রেনে যেতে হবে দেরাদুন তার পর সেখান থেকে মুসৌরী। আবার ট্রেনে দিল্লী পৌঁছে সেখান থেকে বাসে বা ট্রেনে যাওয়া যেতে পারে মুসৌরী। তবে দিল্লী থেকে বাসে যাওয়াই সুবিধাজনক, ট্রেনের চেয়ে বাসে সময়ও লাগে কম। মুসৌরীর সবচেয়ে কাছের এয়ারপোর্ট হল জলিগ্রান্ট (Jolly Grant) এয়ারপোর্ট, দেরাদুন।

থাকবেন কোথায়
মুসৌরীতে প্রচুর হোটেল। এছাড়াও আছে অনেক ছোট-বড় গেস্টহাউস এবং বিভিন্ন সংস্থার হলিডে হোম। মুসৌরীতে পিক ট্যুরিস্ট সিজ্‌ন মে-জুন। অন্যান্য হিল স্টেশনের মত এখানেও সিজ্‌ন অনুযায়ী হোটেল ভাড়া ওঠা নামা করে, তা ছাড়া বাজেট হোটেলে দরাদরিও চলে। ম্যালের উপর থাকা হোটেল গুলোর ভাড়া অপেক্ষাকৃত বেশী একটু দূরে গেলেই ভাড়ার অঙ্কটা কম। মুসৌরীর ম্যালে গাড়ি চলে না, মালপত্র বইতে কুলিই ভরসা।

কি দেখবেন
গোটা মুসৌরী শহরটাই ছবির মত সুন্দর। ঘন্টার পর ঘন্টা বসে কাটানো যায় মুসৌরীর ম্যালে। ম্যালের গায়েই গানহিল টপ (Gun Hill top), মুসৌরীর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অংশ। ম্যাল থেকে রোপওয়ে আছে গানহিল টপে যাবার, পায়ে হেঁটেও ওঠা যায়। ইংরেজ আমলে এখান থেকে কামান দাগা হত, তাই এরকম নাম। গানহিল টপের ওপর থেকে দৃশ্যমান সমুদ্রের ঢেউএর মত একের পর এক হিমালয়ের পর্বত মালা।

গানহিল টপকে ঘিরে একদিকের রাস্তাটার নাম ম্যাল অন্য দিকের রাস্তাটার নাম ক্যামেল ব্যাক রোড (Camel Back Road)। ক্যামেল ব্যাক রোডের এক প্রান্তে কুলরি বাজার অন্য প্রান্তে লাইব্রেরি বাজার। পাইন, দেওদারে ঢাকা এই রাস্তায় হেঁটে বেড়ানোই এক অনন্য অভিজ্ঞতা।

মুসৌরীর সর্বোচ্চ অংশ হল লালটিব্বা (Lal Tibba), মুসৌরী বাস স্ট্যান্ড থেকে দূরত্ব প্রায় পাঁচ কিলোমিটার। যেতে হবে পায়ে হেঁটে বা ঘোড়ায় চড়ে। লালটিব্বা থেকে হিমালয়ের বরফ ঢাকা চুড়োগুলোর দৃশ্য অসাধারণ।

মুসৌরীর আসে পাশে বেশ কয়েকটা জলপ্রপাত আছে, তার মধ্যে যেটা অবশ্যই দেখবেন তা হল কেম্পটি জলপ্রপাত (Kempty Fall)। যমুনোত্রী যাবার রাস্তার ধারে মুসৌরী থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে কেম্পটি জলপ্রপাত। মুসৌরী থেকে বাসে বা গাড়ীতে যাওয়া যায়। কয়েকশ সিঁড়ি ভাঙতে হয় পৌঁছতে। স্নান করতে পারেন কেম্পটির বরফ ঠাণ্ডা জলে। স্নান করার জন্য জামা কাপড়ও ভাড়া পাওয়া যায় কেম্পটিতে। এছাড়াও দেখতে পারেন ভাট্টা ফল্‌স (Bhatta Fall),( মুসৌরী থেকে দেরাদুন রোডে প্রায় ৭ কিলোমিটার গেলে বালতা বলে একটা জায়গা পড়ে সেখান থেকে পায়ে হেঁটে বা গাড়ীতে আরো তিন কিলোমিটার গেলে ভাট্টা ফল্‌স) এবং ঝাড়িপানি ফল্‌স (Jharipani Fall), ( মুসৌরী থেকে প্রায় ৮.৫ কিলোমিটার বাসে বা গাড়ীতে গেলে ঝাড়িপানি সেখান থেকে পায়ে হেঁটে আরো ১.৫ কিলোমিটার গেলে ঝাড়িপানি ফল্‌স)।

মুসৌরীর পাঁচ-ছয় কিলোমিটারের মধ্যে আরো অনেক কিছুই দেখে নিতে পারেন। যেমন মিউনিসিপাল গার্ডেন (Municipal Garden) ওয়েভারলি কনভেন্ট রোড দিয়ে হেঁটে গেলে মাত্র ২ কি.মি., নাগ দেবতা টেম্প্‌ল গাড়ীতে ৬ কি.মি.। দেখতে পারেন ভারতবর্ষের সর্বশ্রেষ্ঠ প্রশাসনিক প্রশিক্ষন কেন্দ্র Lal Bahadur Shastri National Academy of Administration, মুসৌরীর গান্ধীচক থেকে মাত্র দু’ কিলোমিটার। এছাড়াও যার নামে মাউন্ট এভারেস্ট সেই ভারতের প্রথম সার্ভেয়ার জেনারেল সার জর্জ এভারেস্টের (Sir George Everest) বাড়িও দেখে নিতে পারেন মাত্র ছ’কিলোমিটার দূরে।

যাদের হাতে যথেষ্ট সময় এবং পায়ে ক্ষমতা আছে তারা মুসৌরী থেকে গাড়ী ভাড়া করে  দেখে নিতে পারেন নাগ টিব্বা (Nag Tibba) (প্রায় ৫৫ কি.মি., ১০০০০ ফুট, বেশ কিছুটা ট্রেকিং করে যেতে হয়), সুরখন্ডা দেবী মন্দির (তেহরি রোডে ৩৫ কি.মি., ১০০০০ফুট, প্রায় দু’কিলোমিটার ট্রেকিং করে যেতে হয়), কিম্বা ধনোল্টি (Dhanolti, তেহরি রোডে প্রায় ২৫ কি.মি.)।

শপিং
তিব্বতী হস্ত শিল্প আর গাড়োয়ালি কাজ করা ঘর সাজানোর কাঠের সামগ্রী। লাইব্রেরী বাজারে একাটা বাঙালী রসগোল্লার দোকান দেখেছি। খেয়ে দেখতে পারেন।

মনে রাখবেন
মুসৌরীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা শীতকালে -৬ ডিগ্রী সেলসিয়াস পর্যন্ত নেমে যায়, আর গ্রীষ্মকালে তা ৪-১৫ ডিগ্রী মধ্যে ঘোরাফেরা করে। তাই শীতকালে যথেষ্ট শীতের পোষাক আর গ্রীষ্মকালে হাল্কা শীতের পোষাক অবশ্যই নেবেন। আর সস্তার হোটেল নিলে গীজার চলে কিনা তা অবশ্যই দেখে নেবেন।

No comments:

Post a Comment