অপরূপা ডালহৌসি
অচ্যুত সিংহ
Experience of a trip to
Dalhousie, Location of Dalhousie, History of Dalhousie, how to go to Dalhousie,
best season to visit Dalhousie , where to stay at Dalhousie, places to visit
near Dalhousie, pictures of Dalhousie, distance of different Places from Dalhousie.
ডালহৌসি (Dalhousie),
নামটার সাথে পরিচয় দীর্ঘদিনের, কিন্তু কখনও যাওয়া হয়নি। এবারের ভ্রমন সূচীতে তাই
নামটা রেখেছিলাম। ব্রিটিশ ভারতের গভর্নর জেনারেল লর্ড ডালহৌসি’র (Lord Dalhousie) নামাঙ্কিত এই
পাহাড়ি শহর ব্রিটিশরা তৈরি করেছিল ১৮৫৪ সালে, তাদের গ্রীষ্মাবাস হিসাবে। বর্তমানে
এই শহর হিমাচল প্রদেশের চাম্বা জেলায়। ১৯৬৬ সালে ডালহৌসি আসে হিমাচল প্রদেশ
রাজ্যে, তার আগে ছিল পাঞ্জাবে।
|
Snow peak from Dalhousie |
পাঠানকোট (Pathankot)
থেকে ডালহৌসির দূরত্ব ৯০ কিলোমিটার। তিন সাড়ে তিন ঘন্টার পথ। পাঠানকোট ছাড়াও
জম্মু, অমৃতসর, চণ্ডীগড়, জলন্ধর প্রভৃতি সমতলের শহরের সাথে ডালহৌসির সরাসরি বাস
যোগাযোগ আছে। তবে ট্রেনে এলে পাঠানকোটে নেমে যাওয়াই সুবিধাজনক। প্লেনে এলে অমৃতসর
বা জম্মুতে নামতে হবে। দু’জায়গা থেকেই ডালহৌসি মোটামুটি ১৯০ কিলোমিটার। এ পথে
ট্যাক্সিও পাওয়া যায়। পাঠানকোট বাস স্ট্যান্ড থেকে ডালহৌসির বাসে চাপলাম, পাঞ্জাব
রোডওয়েজ (Punjab Roadways) এর বাস। পাঠানকোট শহর ছাড়িয়ে বের হতেই শুরু হল সুন্দর প্রাকৃতিক পরিবেশ। বাস
থেকেই দেখা যাচ্ছে ধৌলাধার পর্বতমালা। শুরু হল পাহাড়ি অরণ্যের মধ্য দিয়ে বাস
যাত্রা। প্রায় দু’ঘণ্টা পর একটা জায়গায় বাস থামল। মাঝে কয়েকবার থেমেছিল যাত্রী
নামা ওঠার জন্য। এবার ১৫ মিনিটের যাত্রা বিরতি।
জায়গাটার নাম দুনেরা। এখানে প্রচুর আমগাছ, এমনকি জঙ্গলের মধ্যেও। এপ্রিল
মাসে সব মুকুলে ভরা। আবার যাত্রা শুরু হল। দুনেরা থেকে ডালহৌসি ৩৫ কিলোমিটার। ধিরে
ধিরে উচ্চতা বাড়ছে। ডালহৌসি যাওয়ার পথে পাহাড়ের প্রকৃতিরও পরিবর্তন ঘটে, প্রথম
দিকে ছিল কোয়ার্টজ বোল্ডার, ধিরে ধিরে দেখা মেলে হিমালয়ের পরিচিত পাললিক শিলা।
প্রায় তিন ঘন্টা চল্লিশ মিনিট পর এসে পৌঁছালাম ডালহৌসি বাসস্ট্যান্ডে।
|
Dalhousie Club near Dalhousie Bus Stand |
বাসথেকে
নামা মাত্রই ছেঁকে ধরল হোটেল টাউটরা, নিজেদের মধ্যে প্রায় মারামারি বেঁধে যাওয়ার
জোগাড়। কোন উপায়ে তাদের ম্যানেজ করে একটা ট্যাক্সি নিয়ে চললাম গান্ধীচক, ডালহৌসির
প্রধান বাজার। মারুতি অল্টো ট্যাক্সি – সাদা রঙের ওপর নীল বর্ডার। ডালহৌসিতে
হোটেলগুলো প্রধানত তিনটে জায়গা ঘিরে - বাসস্ট্যান্ড, গান্ধীচক আর সুভাষচক।
গান্ধীচক কিছুটা ওপরে এবং মার্কেট এরিয়া হওয়ায় ওখানেই থাকব বলে ঠিক করেছিলাম। মে-জুন
ছাড়া ডালহৌসিতে অফ-সিজিন। দরাদরি করলে হোটেল ভাড়ায় বেশ ছাড় পাওয়া যায়। যখন
পৌঁছেছিলাম তখন বেশ রোদ ছিল, হোটেল ঠিক করতে করতেই চারিদিক ঘন কালো মেঘে ঢেকে গেল,
শুরু হল ইলশেগুঁড়ি বৃষ্টি সাথে প্রবল ঠান্ডা হাওয়া। ডালহৌসিতে আসতে হলে সাথে গরম
জামাকাপড় থাকা একান্ত প্রয়োজন – এমনকি গ্রীষ্মকালেও।
|
View from Thandi Sadak, Dalhousie |
যেকোন
পাহাড়ি জায়গার ম্যাপ তৈরি করা বা ম্যাপ বোঝা বেশ কঠিন। পাহাড়ে সমান্তরাল রাস্তা
বিভিন্ন উচ্চতায় থাকে যেগুলো ম্যাপে বোঝানো শক্ত। ডালহৌসি বাসস্ট্যান্ডের পাশেই
ডালহৌসি ক্লাব। বাসস্ট্যান্ড থেকে গান্ধীচক দু’কিলোমিটার আর সুভাষচক আধ কিলোমিটার।
বাসস্ট্যান্ডের দু’দিক দিয়ে দুটো রাস্তা গিয়েছে ডালহৌসির এই প্রধান দুই অঞ্চলে।
গান্ধীচক আর সুভাষচক আবার পরস্পর যুক্ত একটা প্রায় সমতল বৃত্তাকার রাস্তার
মাধ্যমে। এই রাস্তার একটা দিকের নাম ঠাণ্ডি সড়ক অন্য দিকের নাম গরম সড়ক। একদিকের
তাপামাত্রা অন্য দিকের চেয়ে অপেক্ষাকৃত কম। তাই এরকম নাম। এই অংশটাই ডালহৌসির
ম্যাল। অন্যান্য পাহাড়ি শহরের ম্যালের চেয়ে ডালহৌসির ম্যালে লোকের ভিড় অনেক কম।
তাই যারা নির্জন প্রকৃতির মাঝে ঘুরে বেড়াতে চান তাদের কাছে ডালহৌসি আদর্শ। ঠাণ্ডি
সড়ক থেকে একটা শরু রাস্তা খাড়াই নেমে গেছে গীতাঞ্জলি হোটেলের পাশ দিয়ে
বাসস্ট্যান্ডে। ঠাণ্ডি সড়ক থেকে দেখা যায়
পিরপাঞ্জাল পর্বতমালার একেরপর এক বরফ ঢাকা চুড়োগুলো, মাঝের উপত্যকা। মনোরম দৃশ্য।
হাত নিশপিশ করে ক্যামেরার শাটার টেপার জন্য।
গান্ধীচক
|
Gandhi Chowk, Dalhoussie |
গান্ধীচক ডালহৌসির
প্রধান বাজার, তবে বেশ ছোট বাজার। তিব্বতী রিফিউজিদের একটা খুবই ছোট্ট মার্কেটও
আছে এখানে, তবে তাতে তিব্বতী জিনিষের তুলনায় সস্তা চাইনীজ ইলেক্ট্রনিক্স
জিনিষপত্রই বেশী। তিব্বতী হস্তশিল্প কেনার জন্য একটা ‘Tibetan
Handicrafts Centre’ আছে গান্ধীচকে। গান্ধী মূর্তির পাশে আছে সেন্ট
জন্স চার্চ (St. John’s Church), ডালহৌসির সবচেয়ে প্রাচীন
চার্চ। চার্চের পাশে চার্চের লাইব্রেরী। আমি অবশ্য দুটোকেই বন্ধ দেখেছি। গান্ধীচক
থেকে বেশ কিছুটা উপরের দিকে উঠে গেলে ডালহৌসি পাব্লিক স্কুল (Dalhousie
Public School). স্কুল এবং তার পাশের রাস্তা খুব সুন্দর ভাবে
সাজানো। খুব সম্ভবত ‘তারে জমিন পর’ সিনেমার একটা দৃশ্যের স্যুটিং হয়েছিল এখানে।
স্কুলে একটা সিমেন্ট বাঁধানো গ্যালারি আছে হুবহু একই ধরনের গ্যালারি দেখানো হয়েছিল
সিনেমাতে। তাই একথাটা মনে হয়েছিল।
সুভাষ বাউলি
|
Subhas Bouli, Dalhousie |
দুই বিখ্যাত
বাঙালী রবীন্দ্রনাথ এবং সুভাষচন্দ্র এসেছিলেন ডালহৌসিতে। রবীন্দ্রনাথ ১৮৭৩ সালে আর
সুভাষচন্দ্র ১৯৩৭এ। জেলে থাকাকালীন সুভাষচন্দ্র অসুস্থ হয়ে পড়েন। জেল থেকে ছাড়া পেয়ে
১৯৩৭ সালের মে মাসে স্বাস্থ্য উদ্ধারের আশায় ডালহৌসি আসেন সুভাষন্দ্র। বেশ কয়েকমাস
ছিলেন তার এক বন্ধুর বাড়ীতে। পাহাড়ি রাস্তায় রোজ সুভাষ হাঁটতে বেরোতেন আর পথে পড়ত
একটা ঝর্না, রোজ সেই ঝর্নার জল খেতেন সুভাষ। ধীরে ধীরে তিনি সুস্থ হয়ে ওঠেন।
স্থানীয় মানুষ বিশ্বাস করে ওই ঝর্নার জল খেয়েই সুভাষ সুস্থ হয়েছিলেন। ঝর্নাটার নাম
হয়ে যায় সুভাষ বাউলি। বর্তমানে একটা স্মারক আছে সেখানে। ঝর্নাটাও আছে, তবে খুব
ক্ষীণ। ডালহৌসির অন্যতম দ্রষ্টব্য স্থান। গান্ধীচক থেকে যে রাস্তা বাসস্ট্যান্ডে
গেছে তার ঠিক উল্টোদিকের রাস্তায় এক কিলোমিটার দূরে জায়গাটা।
সাতধারা এবং পাঁচপুলা
|
Panch Pula, Dalhousie |
গান্ধীচক
থেকে ডালহৌসি পাব্লিক স্কুল যাবার রাস্তার ঠিক নীচ দিয়ে একটা রাস্তা নেমে গেছে, এই
রাস্তা ধরে প্রায় দু’কিলোমিটার গেলে পড়বে সাতধারা। একটা সিমেন্টের দেওয়াল তার
মাঝখানে সাতটা প্রদীপ মত। প্রত্যেকটা প্রদীপ থেকে ফোঁটা ফোঁটা জল পড়ছে। স্থানীয়
মানুষেরা বিশ্বাস করেন এই জলের ঔষধি গুণ আছে। অনেকেই তাই এই জল পান করেন। নাম শুনে
যে প্রত্যাশা নিয়ে এসেছিলাম তা পূর্ণ হয়নি। আমি সাতটা ঝরনা আছে বলে ভেবেছি। সাতধারা
থেকে আর প্রায় দু’কিলোমিটার এগিয়ে গেলে পাঁচপুলা। নামেই স্পষ্ট এখানে পাঁচটা পুল
অর্থাৎ bridge আছে। স্বাধীনতা সংগ্রামী সর্দার অজিত সিং এর একটা মূর্তি
আছে এখানে। ঝর্নার পাশ দিয়ে বেশ খানিকটা উপরে উঠে গেলে একটা জঙ্গলের মত পরিবেশ।
সুভাষচক
|
St. Francis Church, Dalhousie |
গান্ধীচক
থেকে ম্যাল রোড ধরে দু’কিলোমিটার গেলেই সুভাষচক। গাছ গাছালিতে ভরা প্রায় নির্জন
রাস্তা। সূর্য্যের আলো পাতার ফাঁক দিয়ে পড়ে বেশ একটা আলো আঁধারি তৈরী করেছে।
মাঝখানে একটা ভিউয়ার্স পয়েন্ট। সেখান থেকে পাইন, দেওদারে মোড়া ডালহৌসির পাহাড়গুলো
খুবই সুন্দর। সুভাষচকে সুভাষচন্দ্রের একটা স্ট্যাচু আছে আর উল্টোদিকে একটা চার্চ, সেন্ট
ফ্রান্সিস চার্চ (St. Francis Church). চার্চের দরজা খোলা
থাকায় ভেতরে গেলাম। সুন্দর সাজানো পরিবেশ। এছাড়াও আরও দুটো চার্চ আছে ডালহৌসিতে
সেন্ট প্যাট্রিক চার্চ (St. Patrick Church) এবং সেন্ট
অ্যানড্রুজ চার্চ (St. Andrews Church)। দুটো চার্চই
বাসস্ট্যান্ডের কাছাকাছি সবকটাই দেখার মতো। সুভাষ চকে কয়েকটা খাবারের দোকান এবং
ধাবা আছে। পাহাড়ে হাঁটলে বেশ খিদে পায়, আইসক্রিম খেলাম একটা ধাবা থেকে। আইসক্রিম
এবং চকোলেট পাহাড়ে হাঁটার বাড়তি এনার্জি পাওয়ার পক্ষে বেশ ভালো খাবার।
|
Khajjiar |
গতকাল
বিকেলে ডালহৌসি এসেছি বেলা আড়াইটে নাগাদ। বিকেলের দিকে বৃষ্টি হচ্ছিল বলে গান্ধীচক
ছাড়া আর কিছুই দেখা হয়নি। আজ সারাদিন হেঁটে ঘুরে বেড়িয়েছি সারা ডালহৌসি। যতটা পেরেছি। হেঁটে ঘুরতে পারলে যে কোন জায়গা বেশ
ভালো ভাবে দেখা যায়। ডালহৌসিতে যাতায়াতের প্রধান মাধ্যম নিজের পা দু’খানা। আর
পাওয়া যায় মিটার বিহীন ট্যাক্সি; চুক্তিতে। সমতলের তুলনায় তার
ভাড়া অনেক বেশী। বাসস্ট্যান্ড থেকে গান্ধীচক মাত্র দু’কিলোমিটার- ট্যাক্সিভাড়া একশ
টাকা। ট্যাক্সি ড্রাইভারের কাছেই জেনেছি মে-জুন মাসে ডালহৌসিতে ঘোড়া এবং ঘোড়ার
গাড়ি পাওয়া যায়।
খাজ্জিয়ার এবং ড্যানকুণ্ড পিক
|
Dain Kund Peak, Dalhousie |
|
On the way to Khajjiar |
|
Paragliding at Khajjiar |
ডালহৌসিতে
আজ আমার তৃতীয় দিন। আগামীকাল ডালহৌসি ছেড়ে চলে যাব। আজ একটা ট্যাক্সি ভাড়া করে
চলেছি খাজ্জিয়ার (Khajjiar). ৬৫০০ ফিট উচ্চতায় একটা হিল
স্টেশন। এমনিতে ডালহৌসির গড় উচ্চতা ৭০০০ ফিট। ডালহৌসি থেকে খাজ্জিয়ারের দূরত্ব ২২
কিলোমিটার, গাড়িতে এক ঘণ্টা লাগে। পাহাড়ের মাঝখানে একটা মোটামুটি সমতল মত জায়গা
চারপাশে পাহাড়ি গাছ, সবুজ ঘাস মাঝখানে একটা ছোট্ট জলাশয়, যাকে স্থানীয় লোকেরা বলে
খাজ্জিয়ার লেক। একটা ছবির মত পিকনিক স্পট। বাচ্চাদের মানোরঞ্জনের বেশ কিছু ব্যাবস্থা
আছে। অ্যাডভেঞ্চার বিলাসীরা এখানে স্বাদ নিতে পারেন প্যারাগ্লাইডিং এর। খাজ্জিয়ার
জায়গাটার তুলনায় আমার ভাল লেগেছে খাজ্জিয়ার জাওয়ার রাস্তাটা উঁচু উঁচু গাছের মধ্যে
দিয়ে পাহাড়ি পথ। এই এপ্রিলেও অনেক জায়গায় রাস্তার ধারে পাহাড়ের গায়ে বরফ জমে আছে।
মাঝে এক জায়গায় একটা চেকপোস্ট পড়ল। ১৫ টাকার কুপন কাটতে হল বনাঞ্চলে ঢোকার জন্য। এ
পথেই পড়ে কালাটপ ওয়াইল্ড লাইফ স্যাংচুয়ারি (Kalatop Wild-life Sanctuary). সেখানে আমরা ঢুকতে পারব না, D.F.O. ’র বিশেষ পারমিট
লাগে। তা আনতে হবে জেলা সদর চাম্বা থেকে।
চাম্বা অবশ্য এপথেও যাওয়া যায়। খাজ্জিয়ার থেকে আরো ২২ কিলোমিটার গেলে চাম্বা। প্রায় ঘণ্টা দুয়েক খাজ্জিয়ারে কাটিয়ে চললাম
ড্যানকুণ্ড পিক (Dain Kund), ডালহৌসির সর্বোচ্চ অংশ (৯৫০০
ফিট)। যে রাস্তা ধরে খাজ্জিয়ার এসেছি সেই রাস্তায় প্রায় দশ কিলোমিটার পিছিয়ে আশার
পর ড্যানকুণ্ড যাবার রাস্তা ভেঙেছে। এমনিতে ডালহৌসি থেকে ড্যানকুণ্ড প্রায় ১৭
কিলোমিটার। ড্যানকুণ্ড পিকের একটা দিক ভারতীয় বায়ু সেনার দখলে, সেদিকে যাওয়া মানা,
ছবি তোলাও মানা। অন্য দিক দিয়ে প্রায় দু কিলোমিটার হেঁটে উঠতে হয়। খুবই সঙ্কীর্ন
রাস্তা, একটা মন্দির আছে ওপরে। পিরপাঞ্জালের বরফ ঢাকা চুড়াগুলো আর পাঞ্জাবের দুই
বিখ্যাত নদী ইরাবতী (Ravi) এবং শতদ্রু (Sutlej) দেখা যায় ড্যানকুণ্ড পিক থেকে।
|
Scenic beauty from Dalhousie |
কোন জায়গায়
বেড়াতে গেলে যত দেখা হয় তার চেয়ে না দেখা থেকে যায় অনেক বেশি। ইচ্ছা ছিল চাম্বা
যাব, ডালহৌসি থেকে মাত্র ৫৬ কিলোমিটার। দুর্গ, প্রাসাদে ভরা এক
প্রাচীন পাহাড়ি জনপদ। চাম্বা ছিল গদ্দি এবং গুর্জ্জর উপজাতিদের দেশীয় রাজ্য। এদের
রাজত্ব চলেছিল ৭ম শতাব্দী থেকে ইংরেজ আমল পর্যন্ত। ইংরেজরা এদের কাছ থেকেই জমি
কিনে প্রতিষ্ঠা করেছিল ডালহৌসি। ডালহোউসির ভেতরেও অনেক অদেখা রয়ে গেল, যেমন
বারকোটা হিল্স, বা সেই বাড়িটা যেখানে রবীন্দ্রনাথ মাত্র বারো বছর বয়সে এসে ছিলেন।
অনেকে
ডালহৌসি দিয়ে তাদের হিমাচল ভ্রমণ শুরু করেন। সেক্ষেত্রে ট্রেনে পাঠানকোট নেমে
ডালহৌসি। সেখান থেকে চাম্বা দেখে ধরমশালা। তারপর কাঙড়া উপত্যকা ঘুরে মানালি-কুলু-রোটাং
পাস দেখে সব শেষে সিমলা। তারপর আম্বালা হয়ে ফিরতি যাত্রা। আবার উল্টোটাও করা যায়।
যত তাড়াতাড়ি লিখলাম অত সহজে হয় না। একটু বিশদে পরিকল্পনা করে নিন। আপাতত ডালহৌসিকে
বিদায় জানিয়ে সমতলে ফিরে যাই।
ডালহৌসি থেকে বিভিন্ন জায়গার দূরত্ব এবং বাসে কত সময় লাগে-
জম্মু ১৯০
কি.মি. ৬-৭ ঘন্টা
অমৃতসর ১৯০
কি.মি. ৬-৭ ঘন্টা
পাঠানকোট ৯০
কি.মি. ৩-৩.৫ ঘন্টা
দিল্লী ৫৯০
কি.মি. ১৪-১৬ ঘন্টা
চণ্ডীগড় ৩০০
কি.মি. ৮-৯ ঘন্টা
চাম্বা ৫৬
কি.মি. ২ঘন্টা
ধরমশালা ১৪৫ কি.মি. ৪-৪.৫
ঘন্টা
ম্যাক্লয়েডগঞ্জ ১৪৩
কি.মি. ৪-৪.৫ ঘন্টা
পালামপুর ১৭০
কি.মি. ৫-৫.৫ ঘন্টা
মানালি ২৮৮
কি.মি. ৮-৯ ঘন্টা
কুলু ৩২৯
কি.মি. ৯-১০ ঘন্টা
মণিকরন ৩৩৩
কি.মি. ৯-১০ ঘন্টা
সিমলা ৩৪৫
কি.মি. ১১-১২ ঘন্টা
কাসৌলি ৩৬৭
কি.মি. ১০-১১ ঘন্টা
No comments:
Post a Comment